পালটে যাচ্ছে কারাসেবার ধরন। দেশের ৬৮টি কারাগারের নামও পালটে হবে সংশোধনাগার। এছাড়া কারাবন্দিদের মানবিক সুযোগ-সুবিধা আধুনিকায়ন, দুর্নীতি ও মাদক সরবরাহ বন্ধে নেওয়া হচ্ছে অনেক উদ্যোগ।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সেবা ও সুরক্ষা বিভাগ থেকে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই উদ্যোগে সম্মতি দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী দ্রুত সব কাজক্রম চলছে।
প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিঞা জানান, বিষয়টি নিয়ে সেবা ও সুরক্ষা বিভাগের সচিব মোকাব্বির হোসেনের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। কীভাবে পুরো কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হবে তার একটি ধারণা সেবা ও সুরক্ষা বিভাগকে দেওয়া হয়েছে।
সিনিয়র সচিব জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চান প্রতিটি কারাগারকে প্রকৃতপক্ষে একটি সংশোধনাগারে পরিণত করা হোক। সেখানে যারা থাকবেন তারা যেন সকল ধরনের নাগরিক সেবা পান সেটি নিশ্চিত করতেও প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা রয়েছে। কারাবন্দি হলেও তারা যেন মানবিক সেবা থেকে বঞ্চিত না হন সেটিও নিশ্চিত করতে হবে।
জানা গেছে, আধুনিক যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ও বন্দিদের মানবিক বিষয় বিবেচনায় নিয়ে চালু হচ্ছে ভিডিও কলের সুবিধা। কারাগারের নির্ধারিত বুথে গিয়ে তারা স্বজনদের সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলার সুবিধা পাবেন। সপ্তাহে এক দিন ১০ মিনিটের জন্য এ সুযোগ দেওয়া হবে। আপতত নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগার ( সংশোধনাগার) থেকে পাইলট ভিত্তিতে এই কার্যক্রম শুরু হবে। এজন্য ইতিমধ্যে তথ্য-প্রযুক্তিসহ প্রয়োজনীয় অবকাঠামো উন্নয়ন কাজ শুরু হয়েছে।
সেবা ও সুরক্ষা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (কারা) সৈয়দ বেলাল হোসেন বলেন, এই কার্যক্রম চালু হলে বন্দিদের পরিবারের সদস্যদের বারবার সশরীরে কারাগারে গিয়ে সাক্ষাত্ করার প্রয়োজন পড়বে না। তাছাড়া কারাগারে স্বজনদের যে হয়রানির শিকার হতে হয় সেটাও থাকবে না। স্বজনদের সঙ্গে বন্দিদের দেখা-সাক্ষাতের মাঝখানে মাদক আদান-প্রদানসহ যেসব দুর্নীতি হয় সেটিও অনেকটাই বন্ধ করা সম্ভব হবে। পরিবার বলতে যদি কোন পুরুষ বন্দির স্ত্রী-সন্তান থাকে তারা এ সুবিধা পাবে। যদি নারী বন্দির স্বামী ও সন্তান থাকে তারা কথা বলার সুবিধা পাবে। ভিডিও কলে কথা বলার স্হানেও বসবে সিসি ক্যামেরা।
সেবা ও সুরক্ষা বিভাগ সূত্রে জানা, কারাগারগুলোতে নানা ধরনের দুর্নীতি নিয়ে বছর ধরে গনমাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনা চলে। দুর্নীতি দমন কমিশনে এসব ঘটনা নিয়ে তদন্তও চলছে। এই বদনাম ঘোচাতে প্রতিটি কারাগারের খাবারের মান দেখতে বসানো হয়েছে সিসি ক্যামেরা। বন্দিদের খাওয়ার মানও পর্যবেক্ষণ করা হয় সিসি ক্যামেরায়। পর্যবেক্ষণ চলছে দর্শনার্থীদের সাক্ষাৎপর্বও। সুত্র: ইত্তেফাক
পাঠকের মতামত